Monday, 9 April 2012

মৃত্যু ও আখিরাতের কথা ভাবতে হবে

                                   بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم 

আল্লাহপাক মানব জীবনের জন্য তিনটি কাল সৃষ্টি করেছেন_ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বুদ্ধিমান ওই ব্যক্তি যে অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে বর্তমানকালে প্রস্তুতি নেয় যাতে ভবিষ্যতে সঠিক পথে থাকতে পারে। যারা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নেয় না তাদের জীবনে সফলতার দেখা মেলে না। আল্লাহপাকইমানুষকে এই বোধ দান করেছেন যে, পেছনের জীবনে ভুল হয়ে গেলে সে তা সংশোধন করে নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হয়ে যায়।
অতীত জীবনে অনেক মানুষ সম্পদশালী, ক্ষমতাশালী ছিল, তারা আজ কবরবাসী। অতীত জীবনে আমরা ছোট ছিলাম, বর্তমানে আমরা বৃদ্ধ, ভবিষ্যতে আমাদেরকেও কবর জগতের বাসিন্দা হতে হবে। এরপর রয়েছে অনন্তকালের এক মহাজীবন। কবর জীবন ও আখেরাতের জীবন সম্পর্কে ভাবনা-চিন্তা যার মাথায় সর্বদা বিরাজমান থাকে সে সফলকাম হতে পারবে। আর যদিমরীচিকাময় এই পৃথিবীর পেছনে পড়ে মৃত্যু ও আখেরাতের জীবনের কথা ভুলেবসে থাকে, তাহলে তার জীবন হবে দুর্ভাগ্যে ভরা।মৃত্যু ও আখেরাতের স্মরণইপারে মানুষকে প্রকৃত মানুষ বানাতে এবং পশু ও তার মধ্যকার ব্যবধান ফুটিয়ে তুলতে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সর্বস্থানে, সবসময় মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ কর। যাতে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে মত্ত না হয়ে পড়। মৃত্যুর স্মরণ এমন একটি বিষয় যা অন্তর থেকে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসিতার চিন্তা দূর করে, আত্মীয়-স্বজন, সন্তান-সন্ততি ও ধন-সম্পদের অযাচিত আসক্তি নষ্ট করে দেয়। সুস্থ বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ মাত্রই মৃত্যুর চিন্তায় বিভোর থাকে। যারা মৃত্যুরচিন্তা করে না, দুনিয়া নিয়ে পড়ে থাকে, তাদের বুদ্ধিকে সুস্থ বলা যায় কিভাবে? বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান কেউই কবরে সওয়াল-জওয়াবের সময় পাশে থাকবে না।
যে বান্দা মৃত্যুকে স্মরণে রেখে এই আকিদা পোষণ করে যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ ছাড়া কোনো সাহায্যকারী ও বন্ধু থাকবে না, সে দুনিয়ায় অর্থসম্পদ, বন্ধু-বান্ধব,আত্মীয়-স্বজনকে অস্থায়ী সঙ্গীই মনে করে থাকে। নমরুদ, ফেরাউন, শাদ্দাদ, হামান, আবু জাহল প্রমুখ অর্থ ও প্রভাবশালী ব্যক্তির মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রতি বিশ্বাসী ছিল না।বর্তমান পৃথিবীতেও তাদের অসংখ্য-অগণিত অনুসারী রয়েছে যারাপুনর্জীবন সম্পর্কে বিশ্বাসী নয়। অথচ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, 'প্রত্যেক মানুষকেই (একদিন না একদিন) মৃত্যুরস্বাদ আস্বাদন করতেই হবে।' মানুষের মৃত্যু নির্ধারিত সময় সম্পর্কে তাকে কেউ অগ্রিম জানিয়ে দেবে না। হঠাৎ করেই ফেরেস্তা এসে আত্মা বের করে নিয়ে যাবে। নির্ধারিতসময়ের চেয়ে সামান্য বিলম্ব হবে না।
মৃত্যু একটি গোপন শক্তি। এর মোকাবিলা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। যার হুকুমে মৃত্যু অবধারিত হয়, যদি তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা যায়, তার প্রতি ভালো ধারণা করা যায়,তাহলে আশা করা যায় কবর পরবর্তী জীবনে দুর্ভোগের শিকার হতে হবে না।

0 comments

Post a Comment

Thanks for comment