بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم
একবার মওলানা কাসেম নানোতূবী (রঃ ) কে শিয়া আলেমগণ চ্যালেঞ্জ করেন। সুতরাং বিরাট
বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল।শিয়া আলেমগণে মঞ্চ ভরে গেল।
চারদিকে অসংখ্য শিয়া ও সুন্নী জনতা। কিন্তু কোন সুন্নি আলেমের দেখা নাই। চারদিকে রব উঠলো
“মওলানা কাসেম কৈ”? সুন্নী জনতা লজ্জায় মাথা নত করে রইলো।শিয়া আলেমগণ ভাবলেন
“আমাদের সাথে পেরে উঠবে না, এই ভয়ে সুন্নী আলেমরা অনুষ্ঠানেই আসে নাই”। তাই তারা
একতরফা ভাবে নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করে অনুষ্ঠান শেষ করার উদ্যোগ নিলো।
এমন সময় দেখা গেল একজন লোক জনতার পেছন থেকে নীল লুঙ্গি, সাদা টুপি ও মার্কিন কোর্তা
গায়ে দিয়ে মঞ্চের দিকে এগিয়া আসছেন।ইনিই মওলানা কাসেম(রঃ )। সবার দৃষ্টি মওলানা
কাসেম(রঃ ) –এর দিকে। মওলানা সাহেব পায়ের জুতা বগলে চেপে রেখেছেন।
সবাই বললো, “হুজুর জুতা জোড়া এক পাশে রেখে দেন”।
মওলানা সাহেব বললেন “না, এখানে জুতা রাখা যাবে না।শিয়ারা জুতা চুরি করে।“
শিয়া আলেমগণ অবাক ও উত্তেজিত হয়ে বললেন, “কোথায় দেখেছেন শিয়াদের জুতা চুরি করতে?
কি প্রমাণ আছে আপনার কাছে?”
মওলানা সাহেবঃ কেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ ) এর মজলিস থেকে একজন শিয়া ব্যক্তি জুতা চুরি
করেছিলেন।
শিয়া আলেমগণ : কি বলেন! রাসুলুল্লাহ (সাঃ ) এর যামানায় শিয়া মতবাদ চালুই হয় নাই, শিয়া
ব্যক্তি আসবে কোথা থেকে? আপনি ইতিহাসের কিছু জানেন?
মওলানা সাহেবঃ মাফ করবেন,আমি ভুল বলেছি, রাসুলুল্লাহ (সাঃ ) এর যামানায় নয়, ছাহাবাদের
যামানায়। ছাহাবারা তালিমে মশগুল ছিলেন এমন সময় একজন শিয়া ব্যক্তি তাদের জুতা চুরি
করেছিলেন।শিয়া আলেমগণ : মিথ্যা কথা।ছাহাবাদের যামানায়ও শিয়া মতবাদ চালু হয় নাই।
সেই সময় কোন শিয়া ছিলোনা।
মওলানা সাহেবঃ তাহলে এটি তাবে
য়ীনদের যামানার ঘটনা।
শিয়া আলেমগণ : অসম্ভব! তাবেয়ীনদের সময়ও কোন শিয়াছিলোনা।
মওলানা সাহেবঃ তাহলে নিশ্চই ঘটনাটি তাবে-তাবেয়ীনদের যামানার।
শিয়া আলেমগণ : ইতিহাস সাক্ষী যে এই চারটি যামানার কোনটিতেই
শিয়া ছিলোনা। কারণ শিয়া মতবাদ চালু হয়েছে এই চার যামানার অনেক পরে। সুতরাংশিয়াগণ
জুতা চুরি করতেই পারে না।
মওলানা সাহেবঃ এই চার যামানার কথা বললেন, এর সাথে আমাদের কি সম্পর্ক বলতে পারেন?
শিয়া আলেমগণ : নিশ্চই বলতেপারি। এই চার যামানায় দেয়া ব্যাখ্যার ভিত্তিতেই আমরা মুসলমান।
এর পরে দেয়া সব ব্যাখ্যাই বাতিল ও আবর্জনায় নিক্ষিপ্ত।
মওলানা সাহেবঃ কিন্তু একটু আগেই না আপনারা বললেন এই চার যামানায় কোন শিয়া ছিলোনা।
তাহলে কি আপনারা সেই মতবাদ গ্রহণ করেন নাই যা ওই চার যামানার পরে সৃষ্টি হয়েছে।
আপনাদের মত অনুসারেই যা বাতিল ও আবর্জনায় নিক্ষিপ্ত?
শিয়া আলেমগণ নির্বাক হয়ে গেলেন, তারা মাথা নিচু করে বসে রইলেন। এমন কি জনতাও স্তব্ধ
হয়ে বসে রইলো।
মওলানা সাহেব বগল থেকে জুতা বাহির করে পায়ে দিলেন। বিনয়ের সাথে ধীর কিন্তু দৃঢ় পদক্ষেপে
জলসা থেকে বের হয়ে গেলেন। তিনি অনেক দূর চলে গেলেন, তখনও শিয়া আলেমগণ নির্বাক আর
জনতা স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো।
-:- আজকে আমরা অনেকেই কোরআনের নাম করে ইসলামের অনেক নিয়ম-কানুন নিয়ে প্রশ্ন
তুলি। কোরআন থেকে নতুন নতুন নিয়ম আবিষ্কার করি।
অনেকেই বিজ্ঞান দ্বারা কোরআন প্রমাণ করারও চেষ্টা করি। যদিও বিজ্ঞান আজকে যা বলছে
কালকেও তাই বলবে তার কোন নিশ্চয়তা নাই।
আমাদের মনে রাখা উচিত যে কোরআন আরবিতে লেখা হলেও সেটা কোরাইশদের আরবি, সাধারণ
আরবি নয়। কোরাইশদের আরবি ভাষায় এখন আর কেউ কথা বলে না।
কোরআন বুঝতে হলে:
১- প্রথমে আয়াত নাযিলের প্রেক্ষাপট জানতে হবে
২- তারপর জানতে হবে কোরাইশদের আরবি ভাষার ব্যকারণ।
৩- তারপরও আপনি অনেক ফ্রেজের অর্থ মেলাতে পারবেন না। কারণ কোরআন গদ্য নয়, পদ্য।
সে কারণে আয়াত বোঝার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাহায্য লাগবে, অথবা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের
দেয়া
ব্যাখ্যা গুলো আপনার জানা থাকতে হবে।
== আমাদের সবারই উচিৎ কোরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করা। ==
-:- উপরার ৩টি শর্ত পুরণ হলে আপনিও কোরআন পড়ে এর বক্তব্য বুঝতে পারবেন। অন্যথায়
আপনাকে উপরার ৩টি শর্ত পুরণ করা ব্যক্তিদের দেয়া ব্যখ্যায় সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ।
-:-ব্লগে বা বাস্তবে যারা ইসলামের অনেক নিয়ম-কানুন নিয়ে প্রশ্ন তুলি, এক্ষেত্রে দেখা যায়
আমরা কোরআনের অর্থ নিচ্ছি কোন তরজমা গ্রন্থ থেকে, তারপর সেই গ্রন্থে দেয়া ব্যাখ্যাকে পাশ
কাটিয়ে নিজের মনমত কোন ব্যাখ্যা দিচ্ছি।
এখন আপনিই বলেন, আমরা কি উপরের ৩টি যোগ্যতা অর্জন করেছি? যোগ্যতা অর্জন না করে
থাকলে আমাদের কি উচিত হবে কোরআনের এমন অর্থ করা যা সাহাবাদের সময়ে প্রচলিত অর্থের
থেকে ভিন্ন?