بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم
মৃত্যু যন্ত্রনার বিবরণ
১ . হযরত আয়েশা (রা) রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মৃত্যু যন্ত্রণার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পাশে চামড়া অথবা লাকরির একটি ছোট্ট পানি ভর্তি পাত্র ছিল। তিনি প্রায়ই তাঁর হস্তদ্বয় এই পাত্র থেকে ভিজিয়ে মুখমণ্ডল মুছিয়ে দিতেন আর বলতেন, লা ইলাহাইল্লাল্লাহ ! মৃত্যু যন্ত্রণা বড়ই কঠোর। – (বুখারি)
২ . হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) বলেন, যখন থেকে আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মৃত্যু যন্ত্রণার তীব্রতা অবলোকন করেছি তখন থেকে কারও সহজ মৃত্যুর কথা শুনলে আমার ঈর্ষা সৃষ্টি হয় না। – (তিরমিযি)
৩ . হযরত আয়েশা (রা) আরোও বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মৃত্যু যন্ত্রণার কঠোরতা দেখার পর থেকে মৃত্যু
যন্ত্রণার তীব্র কষ্ট আমার কাছে কোনো খারাপ বিষয় বলে মনে হয় না।- (বুখারি)
যন্ত্রণার তীব্র কষ্ট আমার কাছে কোনো খারাপ বিষয় বলে মনে হয় না।- (বুখারি)
৪ . হযরত সাবেত (রা) রেওয়াত করেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তীব্র মৃত্যু কষ্টে ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি বলছিলেন,
অন্য কোনো বিষয়ের জন্য নয়, মানুষ যদি কেবল মৃত্যু যন্ত্রণার কথা ভেবে আমল করে তাহলেই তার জন্য যথেষ্ট। (যাওয়ায়েদেযুহদ)
৫ . লোকমান হানাফী এবং ইউসুফ ইবন ইয়াকুব (রাহ) বর্ণনা করেন, হযরত ইয়াকুব(আ) এর নিকট যখন তার হারানো পুত্রের
সন্ধানের সুসংবাদ এল তখন তিনি সুসংবাদ দাতাকে বললেন, তুমি এতই ভালো সংবাদ নিয়ে এসেছো যে, তোমাকে যদি এর জন্য পুরষ্কার দিতে হয় তাহলে সেটা হল, আমি তোমার জন্য এই দোয়া করব যেন, আল্লাহ তায়ালা তোমার মৃত্যু যন্ত্রণা সহজ করে দেন।
৬ . হযরত ইবন মাসউদ (রা) এর রেওয়ায়েতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমান, মুমিনের আত্মা তার ঘামের সাথে বের হয়ে যায়। আর গাধাকে যেভাবে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় ঠিকতেমনি কাফিরের আত্মা টেনে বের করা হয়। মুমিন যে পাপগুলো করে ফেলে সেগুলোর প্রায়শ্চিত্ত তার মৃত্যু যন্ত্রণার মাধ্যমে হয়ে যায়। আর কাফির যে পুণ্য কাজগুলো করে সেগুলোর বিনিময় এভাবে দেয়া হয় যে, তার জন্যে মৃত্যু সহজ করে দেয়া হয়। – (তিবরানী কাবির, আবু নায়ীম)
৭ . হযরত আয়েশা (রা) এর রেওয়ায়েতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন,মুমিনের প্রতিটি বিষয়ের মাঝে শুধু বিনিময় আর বিনিময় রয়েছে। এমনকি তার মৃত্যু যন্ত্রণার মাঝেও সে প্রতিদান পেয়ে থাকে।- (ইবন মাজাহ )
৮ . হযরত বুরায়দা (রা) এর রেওয়ায়েতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন,মুমিন ললাটের ঘাম ছেড়ে মৃত্যু বরণ করে। – (তিরমিযি, ইবন মাজাহ, বায়হাকি)
৯ . হযরত আলকামা ইবন কায়েস বর্ণনা করে, তিনি তার চাচাত ভাইয়ের মৃত্যু মুহুর্তে তাকে দেখতে গেলেন এবং কপালে হাত রাখলেন, দেখতে পেলেন তার কপাল ঘর্মাক্ত। আলকামা তখন বললেন, আল্লাহু আকবার! হযরত ইবন মাসউদ (রা) রেওয়ায়েত করেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন,মৃত্যুর সময় মুমিনের ললাট দেশ ঘেমে যায়। নবীজীরাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর বলেন, প্রতিটা মুমিন থেকেকিছু না কিছু গুনাহ রয়েই যায় এবং এগুলোর বদলা সে পেয়ে থাকে। এরপরও যদি তার পাপ অবশিষ্ট থাকে তাহলে এর বদলা এভাবে দেওয়া হয় যে, মৃত্যুর সময়তাকে অধিক কষ্ট দেওয়া হয়।একথাগুলো বর্ণনা করার পর আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস(রা) বলেন, গাধার মত মরতে আমি পছন্দ করি না। -(বায়হাকি, ঈমান অধ্যায়)
১০. হযরত সায়েদ ইবন আসলাম(রা) রেওয়ায়েত করেন যে, মুমিনের পুণ্য কর্ম যখন সমাপ্ত হয়ে যায় আর পাপের কিছু অংশ যদি অবশিষ্ট থাকে তাহলে মৃত্যুকে তার জন্যে কঠোর করে দেওয়া হয় যাতে পাপগুলোর মোচন হয়ে যায়। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর কাফের যদিদুনিয়াতে কোনো পুণ্য কর্ম করে ফেলে তাহলে এর বিনিময়ে তার মৃত্যু সহজ করে দেওয়া হয়। অতঃপর কুফুরির পরিণতি হিসেবে জাহান্নামে প্রবেশ করিয়েদেওয়া হয়। – (ইবন আবি দুনিয়া)
0 comments
Post a Comment
Thanks for comment