Showing posts with label কেয়ামত ও হাশর. Show all posts
Showing posts with label কেয়ামত ও হাশর. Show all posts

Monday 9 April 2012

কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে একটি হাদিস

                  بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم 

মহানবী (সাঃ) বলেছেন, কিয়ামত খুবই কাছে এসে গেছে। তিনি নিকটবর্তী হওয়ার কতগুলো আলামত জানিয়ে দিয়ে গেছেন। আলামতগুলো ছোট বড় দু'করমেরই রয়েছে। আলামত গুলোর মধ্যে...
১. মানুষ ব্যাপকহারে ধর্মবিমুখ হবে,
২. বিভিন্ন রকমের পার্থিবআনন্দ এবং রং তামাশায় মেতে থাকবে,
৩. নাচ-গানে মানুষ মগ্ন থাকবে,
৪. মসজিদে বসে দুনিয়াদারীর আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত হবে,
৫. সমাজে ও রাষ্ট্রে অযোগ্য লোক এবং মহিলা নেতৃত্ব শুরু হবে,
৬. মানুষের মধ্যে ভক্তি, শ্রদ্ধা, স্নেহ ভালবাসা কমে যাবে,
৭. ঘন ঘন ভূমিকম্প হতে থাকবে,
৮. সব দেশের আবহাওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিবে,
৯. অত্যাধিক শিলা-বৃষ্টি হবে,
১০. বৃষ্টির সাথে বড় বড় পাথর বর্ষিত হবে,
১১. মানুষের রূপ পরিবর্তিত হয়ে পুরুষ স্ত্রীলোকের ন্যায় এবং স্ত্রীলোক পুরুষের রূপ ধারন করবে।
কিয়ামতের সময় যখন আরও নিকটবর্তী হবে তখন ইমাম মাহদীর আগমন, দাজ্জালের আর্বিভাব, হযরত ঈসা (আঃ) এর আকাশ থেকে পৃথিবীতে অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজের উৎপাত, পশ্চিম দিক হতে সূর্য উদয়, কুরআনের অক্ষরবিলোপ, তাওবার দরজা বন্ধ, দুনিয়া হতে ইমানদারের বিলুপ্তি ইত্যাদি দেখা দেবে ।

পুলসিরাত কি ও পুলসিরাত পার হতে হলে আমাদের করণীয়.....................

                             بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم 

পুলসিরাত কি?
হাশরের ময়দানে বেহেশত ও দোযখ এনে উপস্থিত করা হবে। বেহেশত উঁচু স্থানে আর দোযখ রাখা হবে গভীর নিম্নে। দোযখের উপর পুল স্থাপন করা হবে সেটিই পুলসিরাত নামে পরিচিত।
ঐ পুলের শেষ প্রান্তে বেহেশত অবস্থিত। বেহেশতে যেতে হলে সেই পুলটি পেরিয়ে যেতে হবে। মানুষেরনেকি-বদি ওজন এবং হিসাব-নিকাশের পর সকল লোকজনকে বলা হবে, তোমরা এখন নিজ নিজ স্থানে চলে যাও। ফিরিস্তাগন আল্লাহর নির্দেশে বান্দাগনকে পুলসিরাত দেখিয়ে দিয়ে বলবে এই তোমাদের পথ। এই পুল পেরিয়েই তোমাদেরকে যেতে হবে। কিন্তু সবার জন্য ঐ পুল পার হওয়া সম্ভবহবে না। পাপীরা সেটাকে চুল থেকেও চিকন দেখতে পাবে। তাদের জন্য সেটি হবে অত্যন্ত ধারালো। তারাঐ পুলে আরোহণ করা মাত্রই তাদের পদদ্বয় কেটে তারা নিন্মস্থ দোযখে পড়ে যাবে।আর নেককারদের জন্য হবে সুপ্রশস্থ সুগম পথ। তারা তাদের নেকীর তারতম্যানুয়াযী কেউবা বিজলীর মত মুহুত্বে পুলসিরাত অতিক্রম করবে। কেউ বা বায়ূ বেগে, আবার কেউবা দ্রত দৌড়ে, কেউবা ধীর মন্তর গতিতে হেঁটে হেঁটে পুল পার হয়ে তাদের গন্তব্স্থল বেহেশতে পৌঁছেযাবে।
আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেন- " যেদিন আমি পরহেগারদিগকে মেহেরবান আল্লাপাকের কাছে মেহমানেরন্যায় জামাত জমাত সমবেত করিব এবং অপরাধী দিগকে পিপাসিত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে চালিত করিব।" (সূরা মারইয়াম, আয়াত ৮৫-৮৬)
আল্লাহপাক আরো বলেন-" তাহাদিগকে জাহান্নামের পথে চালিত কর এবং তাহাদিগকে থামাও কারণ তাহাদিগকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে।" (সূরা ছাফফাত, আয়াত ২৪)
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- পুলসিরাত জাহান্নামের মধ্যখানে স্থাপন করা হইবে। রাসুলের মধ্য আমিই সর্ব প্রথম স্বীয় উম্মত লইয়া ইহা অতিক্রম করিব। সে দিন নবী রাসুলগন ব্যতীত অন্য কেহ কথা বলিবে না। প্রত্যেক নবী বলিতে থাকিবে হায় আল্লাহ! নিরাপত্তা দান করুন। হায় আল্লাহ! নিরাপত্তা দান করুন।
পুলসিরাত পার হতে হলে আমাদের করণীয় কি কিঃ
* অবশ্যই আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) উপর ঈমান আনতে হবে, আখিরাতকে বিশ্বাস করতে হবে।
* আমৃত্যু পাঁচ ওয়াক্ত নামায অবশ্যই পড়তে হবে।
* রমযান মাসে রোযা রাখতে হবে।
* যাকাত প্রদান করতে হবে।
* হজ্জ ফরজ হলে হজ্ব পালন করতে হবে।
* হালাল উপার্জন করতে হবে ও হারামকে বর্জন করতে হবে।
* সুদ, ঘুষ, দুর্ণিতি থেকে নিজেকে ও পরিবারকে রক্ষা করতে হবে।
* আত্বীয়-স্বজনের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। বিপদাপদে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।
* সর্বোপরি কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবনকে পরিচালিত করতে পারলেই পুলসিরাত পার হওয়া যাবে।
হে আল্লাহ ! আমাদেরকে সঠিকপথে চলার তওফিক দান করুন।

হাশরের ময়দানের ভয়াবহ অবস্হা ! যার সম্মুখিন প্রতিটি মানুষকে-ই হতে হবে ।

                          بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم 



পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন,
 
"আপনার প্রতিপালকের কসম, আমি অবিশ্বাসীদেরকে ও শয়তানদিগকে পুনরুত্থিত করব এবং 
তাদেরকে উপুড় করা অবস্হায় জাহান্নামের পার্শ্বে এনে উপস্হিত করবে। " (মারইয়াম-৬৮) ।
হে মানুষ সকল ! চিন্তা কর তখন তোমার কি পরিস্হিতি হবে ? পৃথিবীতে এ যাবত কাল থেকে কেয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সমস্ত মানুষকে খাতনাবিহীন উলঙ্গভাবে হাশরের ময়দানের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে । সে ময়দান তৃণলতাশূন্য সমতল ময়দান ।এমন কোন টিলা থাকবেনা যার আড়ালে লুকিয়ে থাকা যাবে ।আল্লাহ সুবহানা তায়ালা সেদিন সমগ্র পৃথিবীর আনাচ-কানাচে মানুষসহ যত কিসিমের মাখলুক ছিলো সবাইকে একত্রিত করবেন ।
আল্লাহপাক বলেন,
"যেদিন যমীন ও আসমানসমূহকে ভিন্নতর যমীন ও আসমানে রূপান্তরিত করা হবে । " (ইব্রাহীম - ৪৮)
মহানবী (সাঃ) বলতেন,
"কিভাবে আমি আনন্দ উল্লাস করবো, অথচ ইস্রাফিল (আঃ) মুখে শিঙ্গা লাগিয়ে শির অবনত করে গভীর মনযোগে কান পেতে অপেক্ষা করছেন - কখন শিঙ্গায় ফুক দানের হুকুম আসে । "
হযরত মুকাতিল (রহঃ) বলেন, শিঙ্গাটা শিং এর মত । শিঙ্গার গোলাকার মুখটি সাত আসমান ও যমীনের সমান । তিনি অপলক নেত্রে আরশের দিকে তাকিয়ে প্রতীক্ষা করছেন যে, কখন আদেশ করা হয়। প্রথববার যখন শিঙ্গায় ফুক দিবেন , তখন আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত বাসিন্দারা বেহুশ হয়ে মারা যাবে শুধু কয়েকজন ব্যতীত । তারা হলো- জীব্রাঈল, মীকাঈল, ইস্রাফিল ও মৃত্যুর ফেরেশ্তা আজরাঈল (আঃ) । অতঃপর আল্লাহ মৃত্যুর ফেরেশ্তাকে তাদের জান কবয করার হুকুম দিবেন । তারপর আল্লাহর হুকুমে মৃত্যুর ফেরেশ্তার মৃত্যু হবে । তারপর চল্লিশ বছর যাবত পর্যন্ত আল্লাহ কুদরতে সমস্ত রুহ আলমে বরযখে থাকবে । তারপর আল্লাহর হুকুমে ইস্রাফিল (আঃ) জীবিত হবেন ও দ্বিতীয়বার ফুক দিলে সবাই জীবিত হয়ে হাশরের মাঠে একত্রিত হবে ।
এ কথাই আল্লাহ পাক কুরআনে বলেছেন,
" অতঃপর দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুক দেওয়া হবে । তৎক্ষণাত তারা (জীবিত) হয়ে দাড়িয়ে (পুনরুত্থানের ভয়ংকর দৃশ্য) অবলোকন করতে থাকবে। (যুমার -৬৮)
হযরত উকবা ইবনে আমের (রাঃ)বলেন, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, কিয়ামত দিবসে সূর্য্য যমীনের নিকটবর্তী হবে ; ফলে মানুষ ঘর্মাক্ত হতে থাকবে। কারো ঘাম গোড়ালী পর্যন্ত, কারো অর্ধহাটু , কারো উরু, কারো কোমর , কারো মুখ পর্যন্ত পৌছাবে । কারো মাথা পর্যন্ত ঘামের মধ্যে ডুবে যাবে ।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যেদিন মানুষ রাব্বূল আলামিনের সম্মুখে হিসাবের জন্য দন্ডায়মান হবে , সেদিন অনেকেই নিজের ঘামে কান পর্যন্ত ডুবে যাবে ।
আর এক হাদিসে আসে, মানুষ দন্ডায়মান অবস্হায় চল্লিশ বছর পর্যন্ত আসমানের দিকে তাকিয়ে থাকবে এবং সীমাহীন কস্টের দরুণ ঘাম ঝরে ঝরে গলা পর্যন্ত পৌছাবে ।
মহানবী (সাঃ) এর এক স্ত্রী উলঙ্গ থাকার কথা শুনে লজ্জা অনুভব করার কথা বললে, মহানবী (সাঃ) বলেন,
'প্রতিটি মানুষ সেদিন এমন অবস্হার সম্মুখিন থাকবে, যা তাকে অন্য সবকিছুর কথা বিস্মৃত করে দিবে ।'
সাত ব্যাক্তি হারশের নীচে ছায়া পাইবেঃ
হুজুরে আকরাম (সাঃ) এরশাদকরেন, যেইদিন আল্লাহর ছায়া ব্যাতীত অন্য কারো ছায়া হইবেনা, সেই দিন আল্লাহপাক সাত ব্যাক্তিকে আপন রহমতের ছায়ার নীচে আশ্রয় দান করবেন ।
 
১. ন্যায় পরায়ণ শাসক / বাদশাহ,
২. সেই যুবক যে যৌবনে আল্লাহর ইবাদত করে,
৩.যাহার অন্তর মসজিদের সহিত সংযুক্ত থাকে,
৪. সেই দুই ব্যক্তি যাহারা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই ভালোবাসে এবং সেই জন্য একত্রিত হয় এবং সেই জন্য পৃথক হয়,
৫.ঐ ব্যক্তি যাহাকে কোন সুন্দরী নারী অপকর্মের জন্য নিজের দিকে ডাকে তখন সে বলিয়া দেয় যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি ,
৬. যেই ব্যক্তি এত গোপনে ছদকা করে যে, তাহার দ্বিতীয় হাতও উহা টের পায়না ।
৭. যে ব্যক্তি নিরবে বসিয়া আল্লাহর জিকির করে ও তাহার চক্ষু হইতে অশ্রু প্রবাহিত হতে থাকে । (বোখারী-মুসলিম)
 
সুত্রঃ মুক্কশাফাতুল ক্বুলুব । হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহঃ)