بِسْــــــــــــــــــمِ اﷲِالرَّحْمَنِ اارَّحِيم
টিউন : rahat
টিউন : rahat
ফেব্রুয়ারী মাস ভাষার মাস। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু করছি আজকের টিউন। প্রিয় টিউনার ভাই বন্ধুগন আসসালাময়ালিকুম।
একজন অখ্যাত মানুসের গল্প। মানুষটার নাম- আব্দুস সাত্তার (আমি তাঁকে চাচা বলেই ডাকতাম), জন্ম কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার মহালক্ষীপাড়া গ্রামে আনুমানিক ১৯৪৫-১৯৫০ এর মধ্যে। আমিও ইনার গ্রামের ই একজন মানুষ। আব্দুস সাত্তার চাচার জন্ম হয়েছিল একটা কৃষক পরিবারে। তাঁর বাবার জমিজমা ছিল খুবই কম। চাচা পড়াশোনা খুব একটা করতে পারেননি। ক্লাস ফোর / ফাইভ পর্যন্ত পড়েছিলেন (আমার আব্বুর মুখ থেকে শোনা)। আমি আব্দুস সাত্তার চাচাকে আমার ছোট বেলায় দেখেছি। তাঁর চুল দাড়ি পাকা ছিল। ছোট খাট হাসি খুশি প্রানবন্ত মানুষ। তিনি আজ নেই কিন্তু তাঁর হাসিটা আমার এখনো চোখে ভাসে।
একজন অখ্যাত মানুসের গল্প। মানুষটার নাম- আব্দুস সাত্তার (আমি তাঁকে চাচা বলেই ডাকতাম), জন্ম কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার মহালক্ষীপাড়া গ্রামে আনুমানিক ১৯৪৫-১৯৫০ এর মধ্যে। আমিও ইনার গ্রামের ই একজন মানুষ। আব্দুস সাত্তার চাচার জন্ম হয়েছিল একটা কৃষক পরিবারে। তাঁর বাবার জমিজমা ছিল খুবই কম। চাচা পড়াশোনা খুব একটা করতে পারেননি। ক্লাস ফোর / ফাইভ পর্যন্ত পড়েছিলেন (আমার আব্বুর মুখ থেকে শোনা)। আমি আব্দুস সাত্তার চাচাকে আমার ছোট বেলায় দেখেছি। তাঁর চুল দাড়ি পাকা ছিল। ছোট খাট হাসি খুশি প্রানবন্ত মানুষ। তিনি আজ নেই কিন্তু তাঁর হাসিটা আমার এখনো চোখে ভাসে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তখন ও আমাদের গ্রামে একটা প্রাইমারি স্কুল ছাড়া আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। তখন আমাদের গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে একটি এবতেদায়ি মাদ্রাসা গড়ে তুলেন যা আজকের “মহালক্ষীপাড়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা”। সেই মাদ্রাসায় দপ্তরি পদে নিয়োগ পান আব্দুস সাত্তার চাচা। তিনি খুব বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি কিন্তু পড়াশুনা খুব ভালবাসতেন। তিনি মাদ্রাশাটা কে তাঁর সন্তানের মতই ভালবাসতেন। তাঁর জীবনের অর্ধেকটা সময়ই মাদ্রাসার পেছনে কাটিয়েছেন। সচ্ছলতার অভাবে টাকা পয়সা দিতে পারেননি কিন্তু নিজে খেটে রাত বিরাতে এখানে ওখানে ঘুরে বুদ্ধি পরামরশ করতেন কিভাবে মাদ্রাশার উন্নয়ন করা যায়। আজকের “মহালক্ষীপাড়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা” এর পিছনে তাঁর আবদান অবিশরনিয়। আমি চাচার সাথে খুব বেশি সময় কাটানর সুজুগ পাইনি। আমার বাবা ছিলেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি। তাই আমাদের বাড়িতে চাচার যাতায়ত ছিল। চাচা ছিলেন কর্ম অন্ত প্রান, মাদ্রাসার কোন কাজে তিনি কখনও না করতেননা।
আমাদের সবার প্রিয় আব্দুস সাত্তার চাচা আজ এর নেই। তিনি গত ১৯ই জানুয়ারী ২০১২ ইং তারিখে মারা যান (ইন্নলিল্লাহে... ... রাজেউন)।
আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি এই জন্য যে আমি তাঁর জানাজা নামাজে সরিক হতে পেরেছিলাম। সেদিন ছিল শুক্রবার, জুম্মার নামাজের পর আমাদের গ্রামের হাইস্কুল মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আমি আমাদের গ্রামের অনেক জ্ঞানী গুণী উচ্চ পদস্ত প্রভাবশালি মানুশের জানাজার অনুষ্ঠান দেখিছি কিন্তু এত ও লোকের সমাগম দেখিনি। আব্দুস সাত্তার চাচার মিরতুতে গ্রামে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। মানুষ যে তাকে কত ভালবাসত আমি সেদিন তা উপলব্ধি করতে পারি। মানুষ যে নগণ্য পদে থেকেও সমাজের জন্য এবং দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারে তাঁর থেকে উৎকৃষ্ট উদাহরন আর কি হতে পারে?
আব্দুস সাত্তার চাচার জানাজা নামাজে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি এবং মোনাজাতের সময় সকলের কান্নার রোল সেখানে যে পরিস্থিতির তৈরি করেছিল তা বর্ণনা করার ভাষা আমার জানা নাই। আব্দুস সাত্তার চাচার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের সময় সবাই তাঁর প্রতি যে স্রদ্ধা ভালবাসা আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে তা অকল্পনীয়। একজন মানুষের জীবনে এর বেশি কিছু লাগে না।
চাচার হাঁসি মাখা মুখটা আমার আজও চোখে ভাসে। কিছু কিছু মানুষ কে আমরা মনের অজান্তেই ভালবেসে ফেলি কিন্তু আমরা তা অনুভব করতে পারি না। যখন তাদের হারিয়ে ফেলি তখন আমরা বুঝতে পারি আমরা কি হারালাম।
আব্দুস সাত্তার চাচা একজন স সৎ, আদর্শবান, বিদ্যানুরাগি এবং দেশ প্রেমিক ছিলেন। চাচার আত্মার শান্তি কামনা করি। আপনারা চাচার রুহের মাগফেরাতের জন্য দুয়া করবেন।
কর্মের মাঝেই মানুষ বেঁচে থাকে। আসুন দেশ এবং মানুষের সেবায় সাধ্যমত নিজেকে নিয়জিত করি।
0 comments
Post a Comment
Thanks for comment