Tuesday, 13 March 2012

মাতৃভাষার মর্যাদা আল্লাহর দান

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

“আমি সব পয়গম্বরকেই তাদেরস্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথ প্রদর্শনকরেন। তিনি পরাক্রমশালী ওপ্রজ্ঞাময়।” (সূরা ইবরাহিম, আয়াত : ৪)
সুপ্রিয় বন্ধুরা,

আল্লাহপাক ভাষাবিচিত্রতাও জাতিবিচিত্রতাকে সৃষ্টি করেছেন তার সৃষ্টির নিদর্শন হিসেবে। আর তাঁর এ নিদর্শনকে রক্ষার জন্যই তিনি যে জাতির মুখে যে ভাষা ফুটিয়েছেন তাকেই তার ইবাদতের অর্থাৎ নামাজে কিতাব পাঠের যোগ্যতা দিয়েছেন। অনারবি ভাষা যদিতার ইবাদতের অযোগ্যই হতো তবে তার সব কিতাব ও সহিফাই নাজিল করতেন অনারবি ভাষায়। অনারবি ভাষা আল্লাহর ইবাদতের অযোগ্য হলে তাওরাত, যাবুর,ইঞ্জিল কিতাব ও সহিফাগুলোবিভিন্ন অনারবের বিভিন্ন ভাষায় নাজিল করতেন না। আল্লাহর বিধান হচ্ছে যার যার জন্য তার তার ভাষা। প্রত্যেক পয়গম্বরের জাতিসত্তার ভাষায় তার কিতাব ও সহিফা নাজিল করেইতিনি অকাট্যভাবে প্রমাণ করে দিয়েছেন, জাতিসত্তার ভাষা বা মাতৃভাষাই মানবাধিকার। ভাষাবিচিত্রতার মাধ্যমে তিনি বিশ্বমানবতাকে দিয়েছেন ভাষাগত মুক্তি এবং ভাষাবিচিত্রতার মাধ্যমে ভাষাগত মুক্তির দ্বারাই বিশ্ববাসীকে দিয়েছেন জ্ঞানগত ও শিক্ষাগত মুক্তি। তাই তিনি তার কিতাব, শিক্ষা ও জ্ঞানকে নির্দিষ্ট কোন ভাষার প্রাচীরে আবদ্ধ করেননি। সব জাতির ভাষায় আল্লাহর কিতাবের শিক্ষা ওজ্ঞান হবে চিরমুক্ত স্বাধীন এটাই আল্লাহর ইচ্ছা। আর তিনি তাঁর ইচ্ছারই বাস্তবায়ন করেছেন। জাতিসত্তার ভাষা বা মাতৃভাষানীতির দ্বারা তিনি বিশ্বকে ভাষাগত আগ্রাসনমুক্ত রেখেছেন।  সর্বাবস্থায় তিনি বান্দাদের জাতিসত্তার ভাষাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। বিভিন্ন জাতির ভাষায় নাজিলকৃত তার বিভিন্ন কিতাব ও সহিফা এ কথারই অকাট্য প্রমাণ।
মাতৃভাষা বা জাতিসত্তার ভাষাই সহজ ভাষার পথ। এ পথ শিক্ষা ও জ্ঞানের পথ। এ পথ আলোর পথ। এ পথ কখনোই রুদ্ধ করা যাবে না। আল্লাহর নবী রাসূলরা মাতৃভাষার পথেরই পথিক ছিলেন। মাতৃভাষাতে আল্লাহ বান্দাদের দিয়েছেন মৌলিক অধিকার। তাই আজ আমাদের মাতৃভাষা বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষায় সর্বাগ্রে আমাদেরকেই সচেতন হতে হবে।

প্রিয় বন্ধুরা,
এসো মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মাতৃভাষার যে মর্যাদা দিয়েছেন তা রক্ষায় সচেষ্ট হই।
গ্রন্থনায় : আবদুল কুদ্দুস মাখন

0 comments

Post a Comment

Thanks for comment