Thursday 12 April 2012

সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত নামাজ

                بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم

সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত নামাজ
ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। নামাজ বা সালাত অন্যতম ইবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই পবিত্র কোরআনুল করীমে ৮২ জায়গায় নামাজ কায়েম করার প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। ইসলামে নামাজের গুরুত্ব-তাত্পর্য যেমন অপরিসীম-তেমনি আল্লাহ পাকের রহমত ইহ-পরকালের মুক্তিলাভের প্রধান অবলম্বন হিসাবে নামাজের বৈশিষ্ট্য অতীব তাত্পর্যপূর্ণ। যে ব্যক্তি নামাজেয় আনুষঙ্গিক শর্তাবলী যথারীতি পালন করে নামাজ আদায় করবেন আল্লাহ পাক স্বীয় আশ্রয় ওনিরাপত্তায় রাখার নিশ্চয়তা প্রদান করবেন। আমাদের মহানবী হজরত রাসূলে মকবুল (সা: বলেছেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ স্বচ্ছ নহর সমতুল্য অর্থাৎ দৈনিক পাঁচবার ঐ স্বচ্ছ পানিতে গোসল করলে যেমন শরীরের ময়লা, ধূলোবালি দূর হয়ে যায়, তেমনি পাঁচ ওয়াক্তেরনামাজ সমুদয় গুনাহ রশি মাফ করে দেন। রাসূলে পাক (সা: আরো বলেছেন, নামাজ ধর্মের ভিত্তি। যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করেছে সে ধর্মকে বিনাশ করেছে।
একবার কিছুসংখ্যক লোক হজরত নবী পাককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ইয়া রাসূল্লাহ (সা: সর্বোত্তম কাজ কোন্টি? উত্তরে আল্লাহর রাসূল বলেছিলেন-ঠিক সময় সালাত অর্থাৎ নামাজ আদায় করা। তিনি আরো বলেছেন, নামাজ বেহেশতের চাবিকাঠি। তিনি অন্যত্র বলেছেন, আল্লাহপাক স্বীয় বান্দাকুলের উপর তাওহীদের পরে নামাজ অপেক্ষা অধিক প্রিয় কোন জিনিস ফরজ করেন নাই। হুজুরে পাক (সা: আরো বলেছেন, রোজ কেয়ামতে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব-নিকাশ নেয়া হবে। যে ব্যক্তি ছহি-শুদ্ধভাবে পবিত্রতার সাথে নামাজ আদায় করবে। তার পাওনা যথাযথভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পূর্ণ করে দিবেন। আর যে ব্যক্তিনামাজকে অপূর্ণভাবে আদায়করবে তার নামাজকে অন্যান্য আমলসহ নামাজীর মুখমন্ডলে ছুঁড়ে দেয়া হবে। হজরত রাসূলে মকবুল (সা: অন্যত্র বলেছেন, যে ব্যক্তি যথারীতি নামাজ আদায় করে রুকুসেজদা পুরোপুরি সমাধা এবংঅন্তরে নম্রতা, বিনয়, ভক্তি ও মহব্বত কে স্থান দেয়, তাঁর নামাজ নূরানী হয়ে আরশ পর্যন্ত আরোহণ করে। সেখান থেকে সর্বদর্শী আল্লাহ পাকের নিকট দোয়া করতে থাকে। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি অতীব সতর্কতার সাথে নামাজ আদায় করে না- তাকে অভিসম্পাত করতে থাকে। নামাজের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মহানরাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন: “ওয়াইন্নাহা লাকিবিরাতুন ইল্লাআলাল্ খাশেয়ীনা-আল্লাজিনা ইয়াজুন্নুনা আন্নাহুম মুলাক্কু রাব্বিহীম ওয়া আন্নাহুম ইলাইহে রাজিউন, অর্থাৎ: নামাজ কঠিন কাজ তবে ঐ সকল লোকের প্রতিময়,যারা ভয়-ভীতির সঙ্গে নামাজ আদায় করে এবং মনে করে যে, তারা আখেরাতে আল্লাহ সর্বশক্তিমানের সম্মুখে উপস্থিত হবে এবং প্রত্যাবর্তন করবে। পবিত্র কোরআন পাকে আরো বলা হয়েছে:” ফাওয়াইলুল্লিল মুছাল্লীনাল্লাযীনাহুম আন ছালাতিহিম সাহুনাল্লামীনাহুম ইউরাউন। অর্থাৎ:- সেই সকলনামাজীদের জন্য সর্বনাশ, যারা নিজ নিজ নামাজ সম্পর্কে উদাসীন এবং যারা কেবল মানুষকে দেখানোর জন্য নামাজ পড়ে। এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক আরো বলেছেন: যারা নামাজ বরবাদ করেছে এবং নফসের দিকে অনুসরণ করেছে- তারা শীঘ্রই ধ্বংসের সম্মুখীনহবে।
একথা অনস্বীকার্য সালাত বা নামাজ আমাদের জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত,বরকত-নেয়ামত এবং নাজাত লাভের নির্দেশিকা, সর্বোচ্চ যে বিষয়টি তা হলো-পরম করুণাময় আল্লাহ পাক পরওয়ারদেগারের দরবারে কায়মনে আত্মসমার্পণ করার জন্যে নামাজ সর্বোত্তম মাধ্যম।পবিত্র এই শ্রেষ্ঠতম ইবাদত সম্পর্কে হজরত রাসূলে পাক (সা: বলেছেন, আস্সালাতু মে’রাজুল ম’মিনান, অর্থাৎ: নামাজ মু’মিনের জন্য মে’রাজ শুধু গুনাহ পাপ পংকিলতা মুক্তিই নয়-পার্থিব জীবনে যে কোন কঠিন সমস্যায় পড়লে নামাজ পড়ে আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করলে উদ্ধার পাওয়া যায় এবং যে কোন আপদ-বালা, মুসিবত থেকে নাজাত লাভের “সালাতুল হাজত নামাজ পড়ারও বিধান রয়েছে।আখেরাতে নাজাত পাবার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে নামাজ। এই পবিত্র নামাজের মাধ্যমেই আমরা এক কাতারে শামিল হয়ে শ্রেণী বৈষম্য ভুলে যাই এবং দ্বীন-ধর্ম হুকুম-আহ্কাম পালনে শরীক হই। নামাজের মাধ্যমেই আত্মাপরিশোধিত হয়।
স্মরণ রাখা আবশ্যক দুনইয়া-আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহে, আল্লাহর নৈকট্য লাভে অত্যন্ত খুশু-খুজু অর্থাৎঃ অতীব বিনম্র চিত্তে সমার্পিত হৃদয়ে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে নিজকে হাওয়ালা সম্পূর্ণ করে সত্যিকার আল্লাহর খাস বান্দা হিসাবে আমাদেরকে নামাজেরমাধ্যমে নিজদের বিলিয়ে দেই এবং মহান পাক পরওয়ার দেগার জীবনের শেষ মুহর্ত পর্যন্ত সহীহ্ শুদ্ধভাবেনামাজ আদায় করার তৌফিক দেন।


 

যেমন কাজ করবে/তেমনই ফল পাবে/বিশ্বাস হয়না ?তো করে করে দেখ/-/জান্নাত আছে/জাহান্নামও আছে/বিশ্বাস হয়না ?তো মরে দেখ !

0 comments

Post a Comment

Thanks for comment