Tuesday 1 May 2012

কেয়ামত ও হাশর


                             بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيم

কোরআন উঠে না যাওয়া পর্যন্ত কেয়ামত হবে নাঃ
*. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কুরআন যেখান থেকেএসেছে সেখানে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না। তারপর আকাশের চর্তুদিকে মৌমাছির গুণ গুণ শব্দের মত কুরআনের গুণ গুণ শব্দ হতে থাকবে। তখন মহান ও প্রতাপশালী রব বলবেন, “তোমার কি হয়েছে?” কুরআন বলবে, “আমি তোমার কাছ থেকেবেরিয়েছিলাম এবং তোমার কাছে ফিরে আসব। আমাকে পাঠ করা হয়, কিন্তু আমার কথামতআমল করা হয় না।” তখন কুরআনকে উঠিয়ে নেয়া হবে।” দায়লামী এ হাদীসটি হযরত ইবনে আমর (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
আল্লাহর মুঠোর মধ্যে আকাশ ও পৃথিবী
*. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয় কেয়ামতের দিন মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ্‌ সাতটি আকাশ এবং পৃথিবী নিজের মুঠের মধ্যেধারণ করে বলবেন, “আমি আল্লাহ্‌, আমি অশীম দয়ালু,আমি রাজাধিরাজ, আমি পরম পবিত্র, আমি শান্তি, আমি রক, আমি শক্তিশালী ও মতাবান, আমি গর্বের অধিকারী। আমিই পৃথিবী সৃষ্টি করেছি যখন তা কিছুই ছিল না, আমি পুনরায় তা ফিরিয়ে আনব। শাসকগণ কোথায়? জুলুমকারীগণ কোথায়?” এ হাদীসটি আবুশ শায়খ সংগ্রহ করেছেন।
উলঙ্গ ও খাৎনাবিহীন অবস্থায় সমবেত হওয়া
*. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- কেয়ামতের দিন তোমাদেরকে খালি পায়ে, উলঙ্গ ও খাৎনাবিহীন অবস্থায় সমবেত করা হবে। আর সর্বপ্রথম যাকে পোশাক পরান হবে, তিনি হচ্ছেন ইবরাহীম খলীল (আ) মহান আল্লাহ্‌ বলবেন, “আমার বন্ধু ইবরাহীমকে পোশাক পরাও, লোকজন যেন তার মর্যাদা বুঝতে পারে।” তারপর অপরাপর লোককে তাদেরআমলের মান অনুযায়ী পোশাক পরান হবে।” আবূ নুয়াঈ’ম এ হাদীসটিতলাক ইবনে হাবীব থেকে তিনি তার দাদা থেকে সংগ্রহ করেছেন।
অংগ প্রত্যঙ্গের সাক্ষ্য
*. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমরা আমাকে এটা জিজ্ঞেস কর না, কি জন্য আমি হেসেছি। কেয়ামতের দিনবান্দা ও তার রবের মধ্যে যে তর্ক- বিতর্ক হবে তাতে আমি আশ্চর্যম্বিত হয়েছি। বান্দা বলবে, “হে আমার রব!তুমি কি আমাকে প্রতিশ্রতিদাওনি য, আমার প্রতি তুমি জুলুম করবে না।?” আল্লাহ বলবেন, “হ্যাঁ”। বান্দা বলবে, “তবে আমি আমার নিজেরসাক্ষ্য ছাড়া অপর কারো সাক্ষ্য মানব না।” তখন আল্লাহ্‌ বলবেন, “আমি নিজেও কি যথেষ্ট সাক্ষী নই? অথবা মর্যাদাশীল লেখকফেরেশতারাও কি সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট নয়?” বান্দা বহুবার তা নাকচ করে দেবে। তখন তার মুখে মোহর লাগান হবে এবং তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বলতে থাকবে, পৃথিবীতে সে কি করেছিল। তখন বান্দা (মনে মনে) বলবে, “তোরা দূর হয়ে যা, তোরা ধ্বংস হ, তোদের জন্যই আমি সংগ্রাম করেছিলাম।” এ হাদীসটি হাকেম সংগ্রহ করেছেন।
পাপ পূণ্য বিনিময়
*. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রান্ত প্রতিপালক বলেছেন, “বান্দার পূণ্য ও পাপসমূহ উপস্থিত করা হবে।অতঃপর তার কতগুলো পরসপরেরসাথে বিনিময় করা হবে। অতপর যদি একটি পূণ্যও অবশিষ্ট থাকে তবে তা দিয়ে আল্লাহ তার জন্য বেহেশতে যাওয়ার পথ সুগম করে দেবেন।” হাকেম এ হাদীসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকেসংগ্রহ করেছেন।
আমল অনুযায়ী মর্যাদাঃ
*. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- এক লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে, অতঃপর তার গোলামকে তার চেয়েও বেশি মর্যাদায় অধিষ্ঠিত দেখতে পাবে। সে তখন আরয করবে, “হে আমার রব! গোলাম আমার চেয়েও উচ্চতর মর্যাদায় আসীন আছে।” আল্লাহ বলবেন, “তাকে আমি তার আমলের প্রতিদান দিয়েছি। আর তোমাকে তোমার আমলের প্রতিদান দিয়েছি।” দায়লামী এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা)থেকে সংগ্রহ করেছেন।
জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে
*. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- বেহেশত ও দোযখ কলহ করল। বেহেশত বলল, আমারভেতরে দূর্বল ও দারিদ্রগণপ্রবেশ করবে এবং দোযখ বলল,জালিম ও অহংকারীগণ আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। অনন্তর আল্লাহ্‌ জাহান্নামকে বললেন, “তুমিআমার আযাব। তোমাকে দিয়ে যাকে ইচ্ছে আমি শাস্তি দেই।” আর বেহেশতকে বললেন, “তুমি আমার রহমত। তোমাকে দিয়ে যাকে ইচ্ছে আমি অনুগ্রহ করি। আর তোমাদের প্রত্যেকের জন্য নিজ নিজ স্থান নির্ধারিত রয়েছে।” তিরমিযী ও মুসলিম এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন। তারা একে হাসান ছহীহ বলেছেন।
* . রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্‌ বলেছেন, “এ আমার করুনা, এর দ্বারা আমি যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করি, অর্থাৎ তা হচ্ছে জান্নাত।” শায়খাইন এ হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।
জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ প্রার্থী
* . রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- (কেয়ামতের দিন) নিশ্চয়ই এক লোককে জাহান্নামের দিকে টেনে নেয়া হবে। তাকে দেখে জাহান্নাম সংকুচিত হতে থাকবে এবং তার একাংশ অন্য অংশকে ধরে রাখবে। তখন দয়াময় আল্লাহ্‌ তাকে বলবেন, “তোমার কি হয়েছে?” জাহান্নাম বলবে, “পৃথিবীতে সে সর্বদা আমারআযাব থেকে পরিত্রাণ প্রার্থনা করত। মোবারক ও মহান আল্লাহ্‌ তখন বলবেন, “আমার বান্দাকে ছেড়ে দাও।” দায়লামী এ হাদীসটি ইবনে আব্বাস (সাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
* . রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- (কেয়ামতের দিন) সুমহান আল্লাহ্‌ (ফেরেশতাদেরকে) বলেবেন, “আমার বান্দার আমলনামার প্রতি দৃষ্টি ফেল। অতঃপর যাকে তোমারা দেখ যে, সে আমার কাছে বেহেশত চেয়েছিলতাকে আমি বেহেশত দেব, আর যে আমার কাছে জাহান্নাম থেকে পরিত্রান চেয়েছিল, আমি তাকে জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি দেব।” আবূ নুয়াঈ’ম এ হাদীসটিহযরত আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
জান্নাতীর চাষাবাদঃ
* . রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- বেহেশতীদের মধ্যেএক লোক তার প্রতিপালকের কাছে চাষাবাদ করার অনুমতিচাইবে। আল্লাহ্‌ তাকে বলবেন, “তুমি যা কিছু চেয়েছিলে তা কি এখানে নেই,” সে বলবে, হ্যাঁ সব কিছু আছে, কিন্তু আমি চাষাবাদ করতে ভালবাসি।” তারপর সে বীজ রোপন করবে, অনন্তর চোখের পলকে বিজ অঙ্কুরিত হবে, চারা বড় হবে, ছড়া বের হবে এবং ফলস কাটার উপযোগী হয়ে যাবে। তারপর তা পাহাড়ের ন্যায় স্তুপীকৃত হবে। তখন আল্লাহ্‌ বলবেন, “হে আদম সন্তান! লক্ষ্য কর। কোন কিছুই তোমাকে পরিতৃপ্ত করতে পারবে না।” আহমদ ও বুখারী এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
যেমন কাজ করবে/তেমনই ফল পাবে/বিশ্বাস হয়না ?তো করে করে দেখ/-/জান্নাত আছে/জাহান্নামও আছে/বিশ্বাস হয়না ?তো মরে দেখ !

0 comments

Post a Comment

Thanks for comment